অস্ট্রেলিয়ায় বিরল জীবাশ্ম আবিষ্কার
কুইন্সল্যান্ডের বানানা শায়ারের বিলোইলা স্টেট হাই স্কুলের ফোয়ারের এক কোণে প্রায় ২০ বছর ধরে পড়ে ছিল এক পাথর। কলাইড কয়লা খনির এক কর্মী এটি স্কুলে দান করেছিলেন, কারণ তিনি খেয়াল করেছিলেন পাথরে অদ্ভুত প্রাণীর পায়ের ছাপ।
এক স্থানীয় বাসিন্দার মাধ্যমে পাথরটি পৌঁছায় কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্মবিদ ড. অ্যান্থনি রোমিলিওর কাছে। গবেষণায় ধরা পড়ে—এটি আসলে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ঘন ডাইনোসরের পদচিহ্ন সংগ্রহগুলির একটি! অন্তত ৪৭টি ভিন্ন ডাইনোসরের ছাপ পাওয়া গেছে এই পাথরে।
ড. রোমিলিও বলেন, “বিশ্বের যেকোনো জায়গার তুলনায় এটি এক অবিশ্বাস্য আবিষ্কার। ভেবে অবাক লাগে, এত মূল্যবান ইতিহাসের দলিল একটি স্কুলেই পড়ে ছিল।”
বিশেষ আলো ফেলার কৌশলে দেখা যায়, মোট ১৩টি শৃঙ্খলাভাবে সাজানো ৬৬টি পদচিহ্ন, যা তৈরি হয়েছিল ছোট আকারের তিন-আঙুলওয়ালা ডাইনোসর Anomoepus scambus দ্বারা। তাদের পায়ের দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ১৫–২০ সেন্টিমিটার, এবং গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২.১৫ থেকে ৫.৭৮ কিলোমিটার।
শুধু এই পাথরেই শেষ নয়—কলাইড খনির পার্কিং লটের প্রবেশপথে রাখা আরেকটি পাথরেও মিলেছে আরও বড় আকারের দুই প্রজাতির ডাইনোসরের ছাপ। এমনকি তৃতীয় একটি জীবাশ্ম পাথর, যা কেউ রেজিনে মুড়ে বই রাখার স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করছিলেন, সেখানেও পাওয়া গেছে প্রাগৈতিহাসিক প্রমাণ।
এই ছোট্ট শহরের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এসব জীবাশ্ম প্রমাণ বিজ্ঞানীদের সামনে তুলে ধরছে প্রায় ১৯৯ থেকে ১৭৫ মিলিয়ন বছর আগে (প্রারম্ভিক জুরাসিক যুগে) এই অঞ্চলে ডাইনোসরের পদচারণার গল্প—যেখানে হাড়ের কোনো জীবাশ্ম আজও আবিষ্কৃত হয়নি।