ভিনগ্রহীরা কি শুনছে আমাদের সংকেত?
পৃথিবীর বিমানবন্দরগুলির রাডার থেকে নির্গত রেডিও তরঙ্গ ভিনগ্রহের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাও শনাক্ত করতে পারে — এমনকি তাদের প্রযুক্তি আমাদের সমান হলেও। আসন্ন এক গবেষণায় এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্বের বড় বড় বিমানবন্দর — যেমন লন্ডনের হিথ্রো বা নিউ ইয়র্কের জেএফকে — থেকে বিমানের গতিবিধি ট্র্যাক করার জন্য ব্যবহৃত রাডার সিস্টেম এত শক্তিশালী সংকেত পাঠাচ্ছে যে, সেগুলো পৃথিবী থেকে প্রায় ২০০ আলোকবর্ষ দূরে অবধি ধরা পড়তে পারে।
ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছাত্র রামিরো কাইসে সাইডে-এর নেতৃত্বে করা গবেষণায় দেখা গেছে, এই সংকেতগুলো মহাশূন্যে ছড়িয়ে পড়ে এমন এক মাত্রায় পৌঁছায় যা নিকটবর্তী নক্ষত্রমণ্ডল থেকেও শনাক্ত করা সম্ভব। প্রাথমিক ফলাফলে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিমানবন্দর রাডার স্টেশনগুলো মিলিয়ে প্রায় ২০০০ ট্রিলিয়ন ওয়াট শক্তি মহাকাশে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
এতটাই শক্তিশালী যে, পৃথিবী থেকে ২০০ আলোকবর্ষ দূরের কোনো গ্রহে বসে থাকলেও, সেখানে যদি পশ্চিম ভার্জিনিয়ার গ্রিন ব্যাংক টেলিস্কোপ-এর মতো সংবেদনশীল যন্ত্র থাকে, তবে সহজেই তা ধরা যাবে।
এই দূরত্বের মধ্যে অন্তত ১০০০ তারকামণ্ডল রয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে কাছের প্রক্সিমা সেন্টরি মাত্র ৪.২ আলোকবর্ষ দূরে।
তবে ভিনগ্রহীরা আসলেই সংকেতকে কৃত্রিম হিসেবে চিনতে পারবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে যায়। কারণ পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সংকেত ওঠানামা করে, যা সহজে প্রাকৃতিক নয় বলে বোঝা কঠিন।
আরও সরাসরি বার্তা যেতে পারে সামরিক রাডার থেকে। যদিও সেগুলো দুর্বল, কিন্তু অনেক বেশি কেন্দ্রীভূত, ফলে বাতিঘরের আলো ঝলকের মতো অস্বাভাবিক নিদর্শন তৈরি করে।
গবেষকরা বলছেন, এই ফলাফল শুধু ভিনগ্রহীদের জন্যই নয়, আমাদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এটি দেখাচ্ছে, উন্নত প্রযুক্তি আর জটিল বিমান চলাচল ব্যবস্থা থাকা যেকোনো গ্রহ অনিচ্ছাকৃতভাবে তার অস্তিত্ব প্রকাশ করতে বাধ্য।
সাইডে বলেন, “আমাদের গবেষণা ইঙ্গিত দিচ্ছে, এমন রাডার সংকেতই হতে পারে মহাবিশ্বে বুদ্ধিমান প্রাণের এক সর্বজনীন চিহ্ন।”